Image by mohamed Hassan from Pixabay |
বাহ্যিকভাবে এ পার্থক্য যতই নগণ্য হোক না কেন, এ সামান্য পার্থক্যই নারী-পুরুষের আচার-আচরণ এবং মানসিক গড়নে ব্যাপক পার্থক্য তৈরি করে । নারী ও পুরুষ মস্তিষ্কের ব্যতিক্রমী নয়টি বৈশিষ্ট্য নিয়ে এ লেখা ।
১. আয়তন :
নারী এবং পুরুষের মস্তিষ্কের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য হচ্ছে আয়তনের ক্ষেত্রে । একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের মস্তিষ্কের আয়তন একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের মস্তিষ্কের আয়তন একজন প্রাপ্তবষস্ক নারীর মস্তিষ্কের তুলনায় গড়ে দশ শতাংশ বড় । পুরুষ মস্তিষ্কের কোষ সংখ্যাও নারী মস্তিষ্ক থেকে গড়ে চার শতাংশ বেশি । তবে এতে পুরুষদের খুশি হওয়ার কোনো কারণ নেই । কেননা নারীদের মস্তিষ্কে পুরুষদের মস্তিষ্কের তুলনায় স্নায়ুকোষের সংখ্যা এবং আন্তঃকোষীয় সংযোগ বেশি থাকে ।
২. ডান ও বাম মস্তিষ্কের যোগাযোগ
পুরুষরা সাধারণত কোনো কিছু চিন্তা করার জন্য মস্তিষ্কের বাম অংশ ব্যবহার করে এবং ডান অংশের সঙ্গে সেই বিষয়ে শেয়ার করতে পারে না । পক্ষান্তরে নারীরা তাদের দু’অংশেরেই ব্যবহার করতে পারে ।মস্তিষ্কের ‘কর্পাস ক্যালোসাম’ পুরুষের তুলনায় বড় হওয়ায় নারীরা পুরুষদের তুলনায় দ্রুত মস্তিষ্কের উভয় অংশের মধ্যে তথের আদান প্রদান করতে পারে ।
৩. আবেগ
নারী ও পুরুষ মস্তিষ্কের আরেকটি উল্লেখযোগ্য পার্থক্য হচ্ছে মস্তিষ্কের ‘লিম্বিক সিস্টেমের’ আয়তনের পার্থক্য । নারী মস্তিষ্কের লিম্বিক সিস্টেমের আয়তন এবং গভীরতা পুরুষ মস্তিষ্কের তুলনায় বেশি হয়ে থাকে । আর এ কারণে নারীরা পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি আগেপ্রবণ হয়ে থাকে এবং যে কোনো আবেগকে পুরুষদের তুলনায় অনেক গভীরভাবে প্রকাশ করে থাকে । তুলনামূলক বেশি আবেগপ্রবণ হওয়ার কারণে নারীরা পুরুষের তুলনায় বিষণ্নতায় বেশি দেখা যায় ।কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, পুরুষেরা এ ক্ষেত্রে নারীদের চেয়ে বেশি সফল হয় ।
Image by Gordon Johnson from Pixabay |
৪. সম্পর্ক গড়ে তোলা
লিম্বিক সিস্টেমের দরুন নারীদের পুরুষদের তুলনায় সম্পর্ক গড়ে তুলতে বেশি তৎপর দেখা যায় । পুরুষের চেয়ে নারীরা সুন্দরভাবে গুছিয়ে কথা বলতে পারে । একজন নারী ঠিক যেভাবে কোনো ইস্যু নিয়ে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারে একজন পুরুষ তা পারে না । পুরুষেরা সাধারণত কাজের কথায় আসতে খুব বেশি উদগ্রীব থাকে । নারীরা এ ক্ষেত্রে ব্যাতিক্রম । একজন মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করতে যতটা আবেগ দেখানো প্রয়োজন তারা ততটাই দেখাতে পারে ।
৬. গাণিতিক দক্ষতা
মস্তিষ্কের ইনফিরিয়র পার্সিয়াল লিব (আইপিএল) নামক একটি অংশ আছে । এ অংশ পুরুষদের ক্ষেত্রে বড় হয়ে থাকে । মস্তিষ্কের এ অংশ গাণিতিক বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করে । পুরুষদের ক্ষেত্রে এ অংশটি বড় হওয়ায় গণিতে তারা বেশি দক্ষ হয় । নারীরা তুলনামূলকভাবে কম । মজার বিষয় হলো বিজ্ঞাণী আইনস্টাইনের এ অংশ সাধারণ মানুষের চেয়ে অনেক বড় ছিল ।
৭. বিশেষ দক্ষতা
বিশেষ ক্ষমতা প্রদর্শনে নারীর চেয়ে এগিয়ে পুরুষ । এ ছাড়া কাজের গতি ও বহুমাত্রিক ভাবনা উপস্থাপনায় পুরুষরা এগিয়ে । বিভিন্ন কাজে বহুমাত্রিকতা ও গতি নিয়ে চিন্তার ক্ষেত্রে নারীদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে ।
Image by mohamed Hassan from Pixabay
৮. নিয়ত পরিবর্তনশীল
নারীরা মাসের ত্রিশ দিনই তাদের আশেপাশের ব্যাক্তিদের দ্বারা সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয় ।তাদের হরমোন নিঃসরণের পরিমাণ তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হয় । এ হরমোন পরিবর্তনজনিত কারণে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি, কর্মস্পৃহা ও সংবেদনশীলতা একেক সময় একেক রকম থাকে । যেমন- ‘রজঃপ্রাপ্তির দশ দিন পর পর্যন্ত নারীরা খুবই চনমনে আর প্রাণবন্ত থাকে’, বললেন ব্রিজেনডাইন । তারা এ সময় সেসব পোশাক পড়েন যেসব পোশাকে তাদের আবেদনময়ী দেখায় ।
এর ঠিক এক সপ্তাহ পর তাদের মস্তিষ্কে প্রোজেস্টরেন হরমোনের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় ও সাহসী হতে উদ্দীপ্ত করে ।ব্রিজেনডাইন বলেন, এ সময় নারীরা চা খেতে এবং ভালো বই পড়তে বেশি ভালোবাসে ।এ সময়টাতে তারা খুব সহজেই কাঁদতে পারে, অন্যকেও উত্যক্ত করতে ভালোবাসে ।তবে তাদের এ কান্নাটা পুরোপুরি ছলো আশ্রয় নেওয়া ।
৯. অন্তর্যামী নারী
শুধু সংসার সামলানো ও ছলাকলায় নয়, মনের না বলা কথা বুঝতেও জুড়ি নেই নারীর । তারা কাছের মানুষদের না বলা কথার ফ্রিকোয়েন্স ধরতে পারে খুব সহজেই । নারীদের ঘ্রাণশক্তি খুবই তীক্ষ্ণ । সূক্ষ্ণ গন্ধ ও ভিন্ন রকমের স্বাদ নিতে অনন্য নারী । শুধু এসবই নয়, তাদের অফিসের বস কিংবা স্বামী কোন বিষয়টা নিয়ে বেশি চিন্তিত কিংবা পরিকল্পনা করছে তাও সহজেই ধরতে পারে তারা । এসব সম্ভব তাদের মস্তিষ্কে গঠনে ভিন্নতার কারণেই ।
0 মন্তব্যসমূহ