Image Source : pixabay |
নদী এবং নদ এর মধ্যে পার্থক্য -
সাধারণত কোনো জলপ্রবাহের নাম যদি মহিলা বাচক হয় তাহলে নদী এবং পুরুষবাচক হলে নদ । তবে সূত্রের কিছুটা ব্যতিক্রম ও বিতর্ক লক্ষণীয় । সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য সূত্র হল: নামের শেষে যদি আ-কার, এ-কার, ও-কার, ঔ-কার প্রভৃতি থাকে তবে নিশ্চিতভাবে সে প্রবাহগুলো নদী নামে অভিহিত হবে ।
নামের শেষে এগুলো না থাকলে এবং শুধু হ্রস্ব উ-কার থাকলে সেটি নদ হবে ।
যেমন ‘আড়িয়ালখাঁ’ পুরুষজ্ঞাপক নাম হলেও শেষে আ-কার রয়েছে । সে জন্য এটি নদ না হয়ে নদী । ‘সিন্ধু’ বানানের শেষে যেহেতু হ্রস্ব উ-কার রয়েছে, সেহেতু এটি নদ । ‘নীল’ স্ত্রী নামজ্ঞাপক একটি প্রবাহ । যেহেতু এর শেষে আ-কার, এ-কার কিছু নিই, সে জন্য এটি নদ । এভাবে ‘ঘাঘট’ ন্ত্রী নামজ্ঞাপক জলপ্রবাহ হলেও অন্তবর্ণ ‘ট’-এর পরে আ-কার, এ-কার নেই, তাই এটি নদ ।
বিশ্বে সংকট সৃষ্টিকারী কয়েকটি নদ-নদী
নীলনদ :
পৃথিবীর দীর্ঘতম এ নদীটি ১০টি দেশের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হয়েছে । মিশরের সামগ্রিক পানি চাহিদার ৯৭ শতাংশ মিটে থাকে নীল নদের পানি দিয়ে । ইতিমধ্যে নীল নদের পানি দিয়ে উজানের দেশসমূহ-সুদান, কেনিয়া, রুয়ান্ডা, বুরুন্ডি, উগান্ডা, তাঞ্জানিয়া ও জায়ারের মধ্যে এক ধরনের টানাপোড়েন শুরু হয়ে গেছে ।
Image Source : Wikimedia |
টাইগ্রিস-ইউফ্রেটিস :
তুরস্ক সিরিয়া আর ইরাক দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে । ৩৩টি বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে তুরস্ক দুটি নদীর ওপরই তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে ।ভাটির দেশ সিরিয়া ও ইরাকের কৃষি সম্পূর্ণ নির্ভরশীল ইউফ্রেটিস নদীর ওপর । এর মধ্য আবার সিরিয়া এ নদীর পানি আটকে তার সেচ পদ্ধতি জোরদার করতে চাইছে । সেরকম হলে আরও বেশি সমস্যায় পড়ে যাবে ইরাক ।
Image Source : wikimedia |
গঙ্গা :
গঙ্গা নামে হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহ থেকে উৎপত্তি হয়ে নবাবগঞ্জ দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে নাম হয় পদ্মা । বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বড় দ্বন্দ্ব গঙ্গার পানি নিয়ে । বাংলাদেশের পুরো উত্তরাঞ্চলের কৃষি ব্যবস্থা গঙ্গার পানির ওপর নির্ভরশীল । ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে তার সীমান্তের সামান্য ভেতরে ফারাক্কা বাঁধ দিয়ে শুকনো মৌসুমে পানি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে । ১৯৯৬ সালে ৩০ বছরব্যাপী গঙ্গার পানি বন্ট চুক্তি স্বাক্ষরিত হবার পর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে ।
Image Source : Wikimedia |
ব্রক্ষপুত্র :
এ নদের পানি নিয়েও ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিরোধ চলছে । ভারত উজানে ফারাক্কার মতো বাঁধ দেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে । এ বাঁধ নির্মিত হলে বাংলাদেশে মারাত্মকভাবে পানি সংকট দেখা দিবে ।
Image Source : Wikimedia |
জর্ডান :
এ নদীটি জর্ডান, সিরিয়া, ইসরাইল আর লেবাননের মধ্য দিয়ে প্র্রবাহিত । ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের পর ইসরাইল যে ভুখন্ড দখল করে নেয় সেখান দিয়ে প্রবাহিত এ নদী থেকেই তাদের পানির পুরো চাহিদা ৪০শতাংশ মিটে যায় । বর্তমানে আরব-ইসরাইল যে দ্বন্দ্ব চলছে জর্ডান নদীর পানি বন্টন দ্বন্দ্ব এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য । জর্ডান নদীর পানি খ্রিস্টধর্মীয়দের কাছে বিশেষ পবিত্র ।
Image Source : Wikimedia |
রিও গ্রেনডে :
দীর্ঘ খরার পর এ নদীর পানি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোর মধ্যে গত কয়েক বছর ধরে দ্বন্দ্ব চলছে । মেক্সিকো তার অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য আরও পানি চাচ্ছে । আর এর বিরোধিতা যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিকরা ।
Image Source : Wikimedia |
সিন্ধু :
পাকিস্তান প্রধানত এই নদীটির ওপরই নির্ভরশীল ।সিন্ধুর উপনদী প্রবাহিত হচ্ছে ভারতের মধ্য দিয়ে । ভারতের শস্যভান্ডার বলে পরিচিত পাঞ্জাবের কৃষি ক্ষেত্রের জন্য এই নদের পানি অপরিহার্য । এ নদের পানি নিয়ে দু’দেশের মধ্যে চলছে দ্বন্দ্ব ।
Image Source : Wikimedia |
জাম্বেসী :
জাম্বিয়া, জিম্বাবুইয়ে, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ কয়েকটি দেশ এ নদীর পানি ব্যবহার করে থাকে । এসব দেশে লোকসংখ্যা দ্রুত বাড়ছে, সে কারণে একই হারে বাড়ছে তাদের পানির চাহিদা । এর মধ্যে আবার দক্ষিণ আফ্রিকা পরিকল্পনা করছে নদীর পানির দিক পরিবর্তনের । তাদের পরিকল্পনা উদ্বিগ্ন করে তুলেছে অন্য দেশগুলোকে ।
Image Source : Wikimedia |
রেফারেন্স সমূহ :
https://en.wikipedia.org/wiki/Nile
https://en.wikipedia.org/wiki/Tigris%E2%80%93Euphrates_river_system
https://en.wikipedia.org/wiki/Ganges
https://en.wikipedia.org/wiki/Padma_River
https://en.wikipedia.org/wiki/Brahmaputra_River
https://en.wikipedia.org/wiki/Jordan_River
0 মন্তব্যসমূহ