টরেন্ট কি ও কিভাবে কাজ করে? টরেন্ট থেকে ডাউনলোড করার উপায়

 

what-is-torrent-and-how-does-it-work-in-bangla
Image by Mike Mackenzie from Flickr

টরেন্ট কি?

‘টরেন্ট’ হচ্ছে এক ধরনের ফাইল ডাউনলোডিং বা শেয়ারিং মেকানিজম যার মাধ্যমে যেকোনো ফাইল ডাউনলোড বা শেয়ার করা যায় । এটি যেকোন ধরণের ফাইল হতে পারে যেমন-মিউজিক, মুভি, গেইম, অ্যাপ্লিকেশন ও ই-বুক ইত্যাদি । ট্রান্সমিশন বা ডাটা পাঠানোর সময়্ এটি অসম্পূর্ণ থাকে বিধায় একে টরেন্ট বলা হয়ে থাকে ।

টরেন্ট কিভাবে কাজ করে

সাধাণত আমরা যখন কোনো ওয়েবসাইট থেকে কোনো কিছু ডাউনলোড করি তা সরাসরি উক্ত সাইটের কেন্দ্রীয় সার্ভার থেকে ডাউলোড হয় । কিন্তু টরেন্টে যেকোনো ফাইল পিয়ার টু পিয়ার (P2P) নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ‘বিট টরেন্ট’ প্রটোকলের মাধ্যমে পাঠানো হয় । এই প্রোটকলে কেন্দ্রীয় কোনো সার্ভার নেই এখানে কম্পিউটারগুলোই এক একটি সার্ভারের ভূমিকা পালন করে । অর্থাৎ প্রেরক কম্পিউটার থেকে বিট টরেন্ট প্রটোকল তারপর প্রাপক কম্পিউটার এ পৌচ্ছায় ।

what-is-torrent-and-how-does-it-work-in-bangla


টরেন্ট ব্যবহারের সুবিধা 

যদি কোন টরেন্ট ফাইল থেমে যায় তবে তা রেগুলার ফাইলের মত অপেন করা যায় না, কারণ ঐ মুহুর্তে ফাইলটি প্রয়োজনীয় সব ডাটা নাও রাখতে পারে । তবে টরেন্ট ডাউনলোডের সুবিধা হল- 

১. এটি যেকোন সময় রিজিউম করা যায় অর্থাৎ যে জায়গায় থেমে গিয়েছিল সেখান থেকেই আবার শুরু করা যায় ।

২. এই ডাউনলোডটি বিট টরেন্ট ক্লায়েন্ট ব্যবহার করে যেকোন চালু সার্ভার থেকে করা যায় । টরেন্ট ডাউনলোড একই সাথে একাধিক সার্ভার ব্যবহার করতে পারে ।

৩. বিট টরেন্ট প্রটোকল একটি সিংগেল ফাইল পাঠানোর জন্য একাধিক কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকে । ওই ফাইলের বিভিন্ন অংশ বিভিন্ন অংশ বিভিন্ন কম্পিউটার হতে ডাউনলোড হতে থাকে । 

৪. ফলে একই সার্ভারের উপর চাপ কমে এবং ব্যান্ডউইথও কম ব্যবহৃত হয় । ফলে ট্রান্সফার স্পিডও থাকে ভালো । 

টরেন্ট থেকে ফাইল ডাউনলোড করার উপায়

টরেন্ট থেকে যেকোন ফাইল ডাউনলোড করতে হলে প্রথমে ‘টরেন্ট ক্লায়েন্ট’ সফটওয়্যার ডাউনলোড করতে হবে । উক্ত টরেন্ট ক্লায়েন্ট ইন্সটলের পর আপনি যেকোনো টরেন্ট সাইট থেকে দ্রুততম সময়ে ডাউনলোড সম্পন্ন করতে সক্ষম হবেন ।

সেরা ৩ টরেন্ট ক্লায়েন্ট

১. uTorrent

ইউ টরেন্ট পিসিতে ব্যবহৃত সবচেয়ে জনপ্রিয় টরেন্ট ক্লায়েন্ট সফটওয়্যার । বিনামূল্যের হালকা ও ক্লিন সফটওয়্যারটি উইন্ডোজ, ম্যাক, লিনাক্স এর পাশাপাশি অ্যান্ড্রয়েড ওএস সমর্থন করে । তবে ফ্রি সংস্করণে বিজ্ঞাপণ প্রদর্শন করে তাই বিজ্ঞাপণ সরাতে হলে ‘প্রো’ সংস্করণ ক্রয় করতে হবে ।

ওয়েব অ্যাড্রেসঃ https://www.utorrent.com/ 


২. BitTorrent

এটি বিট টরেন্টের অফিসিয়েল ক্লায়েন্ট অ্যাপ্লিকেশন । এটি ইউ টরেন্টের মত ফ্রি ব্যবহার করা গেলেও বিরক্তিকর বিজ্ঞাপন সরাতে চাইলে টাকা গুনতে হবে । সমর্থিত প্ল্যাটফর্মগুলি হচ্ছে উইন্ডোজ, ম্যাক, অ্যান্ড্রয়েড।

ওয়েব অ্যাড্রেসঃ https://www.bittorrent.com/


৩. qBittorrent

কিউবিট টরেন্ট সকলের জন্য উন্মুক্ত একটি সফটওয়্যার । অপেন সোর্স সফটওয়্যারটি সম্পূর্ণ বিজ্ঞাপণ মুক্ত এবং উপরের দুই ক্লায়েন্ট সফটওয়্যার এর সেরা বিকল্প ।তবে এটি শুধুমাত্র উইন্ডোজ, ম্যাক ও লিনাক্স সমর্থিত ডেক্সটপ পিসিতে ব্যবহার করা যাবে ।

ওয়েব অ্যাড্রেসঃ https://www.qbittorrent.org/


টরেন্ট ব্যবহার করা কি অবৈধ?


টরেন্টে এর মাধ্যমে ফাইল শেয়ার করা বা ডাউনলোড করা অবৈধ নয়, এটি শুধুমাত্র একটি ফাইল শেয়ারিং প্লাটফর্ম । তবে শেয়ারকৃত বা ডাউনলোডকৃত ফাইলটি যদি কপিরাইটযুক্ত হয় অর্থাৎ আপনি যদি এর মালিক/নির্মাতা/লেখক না হন কিংবা এর মেধাস্বত্বের সাথে জড়িত নন তাহলে তা শেয়ার করা বা ডাউনলোড করা অবৈধ । যা অনেক দেশে শাস্তিযোগ্য অপরাধ ।


টরেন্ট ডাউনলোডে সতর্কতা

টরেন্ট থেকে অনেক প্রিমিয়াম বা পেইড সফটওয়্যার/অ্যাপ্লিকেশন ফ্রিতে পাওয়া যায় ।মূলত এ সফটওয়্যারগুলো অরিজিনাল সফটওয়্যার এর ক্র্যাক বা মডিফাইড ভার্সন যা ইন্সটলের পর ক্ষতিকর ম্যালওয়্যার, ভাইরাস ছড়িয়ে দিতে ও তথ্য হাতিয়ে নিতেও সক্ষম ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ