ভূমিকম্প হল বিশেষ কোনো প্রাকৃতিক কারণে ঘটা ভূমির তীব্র কম্পন যা
বিস্তীর্ণ জায়গা জুড়ে আমরা অনুভব করি। ভূমিকম্প পরিমাপ করার যন্ত্র সিসমোমিটার (seismometer)
আবিষ্কার হওয়ার পর থেকে বিশ্বের সর্বোচ্চ মাত্রার পাঁচটি ভূমিকম্প গুলো
ছিলো ১৯৬০ সালে চিলিতে ৯.৫ মাত্রার, ১৯৬৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ৯.২ মাত্রার,
২০০৪ সালে ইন্দোনেশিয়ায় ৯.২ মাত্রার, ২০১১ সালে জাপানে ৯.১ মাত্রার এবং
১৯৫২ সালে রাশিয়ায় ৯.০ মাত্রার ৷ তবে ভূমিকম্পের মাত্রার উপর আসলে এর
ক্ষয়ক্ষতি নির্ভর করে না; সাধারণত ক্ষয়ক্ষতি নির্ভর করে ভূমিকম্পের আওতায়
জনবসতি ঠিক কত খানি তার উপর ৷
ভূমিকম্প হওয়ার কারণ
আমাদের পৃথিবীতে এমন কোনো মহাদেশ নেই যেখানে ভূমিকম্প হয় না, তবে তুলনামূলক কিছু কিছু অঞ্চলগুলোতে মারাত্মকভাবে ভূমিকম্প হয়ে থাকে ৷
আমাদের
ভূত্বকের সবচেয়ে উপরে যে ভূত্বক (lithosphere) আছে তা বেশ কয়েকটি টুকরো বা ভাঙ্গা
অংশে বিভক্ত আর এরকম প্রতিটি টুকরো বা ভাঙ্গা অংশকে পাত বা প্লেট বলা হয় যা
অনবরত সরে যাচ্ছে ৷ সঞ্চালনের কারণে পাতগুলো ফাটল রেখা বরাবর কোথাও কোথাও
একটা আরেকটির উপর উঠে যাওয়ার জন্য চাপে থাকে; আবার কোথাও আণুভূমিকভাবে
পিছলে সরে যাওয়ার জন্য চাপে থাকে ৷
প্লেটগুলোর সঞ্চালন যেহেতু চলতেই থাকে
তাই ধীরে হলেও এর চাপ ক্রমাগত বাড়তেই থাকে; আর এক সময় শিলার প্রতিরোধ
ক্ষমতার বাইরে চলে যায় এবং শিলাগুলো ভেঙ্গে যায় ৷ তাই বিশাল শিলাখন্ডের
হঠাৎ স্থানচুত্যির কারণে বিশাল পরিমানে শক্তি মুক্তি পায় ফলে কেঁপে উঠে
মাটি ঘটে ভূমিকম্প |
তাছাড়া অগ্নেয়গিরির বিষ্ফোরণ ও উল্কাপিন্ডের কারণেও ভূমিকম্প ঘটতে পারে ৷ একারণেই
পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি ও বড় ভূমিকম্প গুলো ঘটে ভূত্বকের পাতগুলোর ফাটল রেখা
ধরে ৷
সেকরণে আমরা আইসল্যান্ড, জাপান, ইন্দোনেশিয়া বা নেপালেও বড় বড়
ভূমিকম্প হতে দেখি ৷ তুরস্কেও ভূমিকম্প একটি নিয়মিত ঘটনা৷ আপনি জেনে আবক
হবেন যে , দেশটিতে শুধুমাত্র ২০২২ সালে ৪ মাত্রার বেশি ভূমিকম্প হয়েছিল
৩২২টি ! দেশটির মূল অবস্থান আনাতোলিয়ান প্লেট (Anatolian Plate)- এর উপর ৷
তবে এর বাইরেও দেশটি ইউরেশিয়ান প্লেট , আফ্রিকান প্লেট ( African Plate) ও
আরবিয়ান প্লেট (Arabian Plate) এর অংশে এসে সংযুক্ত হয়েছে ফলে কোনো একটি
প্লেটের সামান্য নড়াচড়ার অর্থই হচ্ছে দেশটিতে ভূমিকম্পের সৃষ্টি হওয়া ৷
আজকের ভূমিকম্পের মাত্রা কত দেখার জন্য ওয়েব ঠিকানা : https://earthquaketrack.com/
0 মন্তব্যসমূহ