জি আর ই (GRE) কি, কেন, কিভাবে : বিষয়ভিত্তিক ও সাধারণ টেস্ট এর নিয়ম ও রেজিস্ট্রেশন

 জি আর ই কি ?

“ গ্র্যাজুয়েট রেকর্ড এক্সামিনেশন ( Graduate Record Examination ) ” –কে সংক্ষেপে বলা হয় “ জি আর ই ( GRE ) ” । এটি মূলতঃ এডুকেশনাল টেস্টিং সার্ভিস ( ETS ) –এর একটি রেজিস্টার্ড এডুকেশনাল ব্র্যান্ড , তাই একে লেখা হয় GRE® । আমেরিকার ভালো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে ( ব্যাচেলর ডিগ্রির পর এমএস / পিএইচডি প্রোগ্রাম ) ভর্তির জন্য জি আর ই অত্যন্ত জরুরি একটি বিষয় ।

what-is-gre-full-rules-for-registration-and-subjective-and-general-tests-in-bangla
Photo by pixabay from Pexels

বিষয়ভিত্তিক জি আর ইসাধারণ জি আর ই সাধারণত নিম্ন লিখিত আটটি বিষয়ের উপর বিষয়ভিত্তিক জি আর ই টেস্ট দেয়া যায়ঃ 

১। প্রাণরসায়ন ( Biochemistry ) , কোষ এবং আণবিক জীববিজ্ঞান ( Cell and Molecular Biology ) 

২। জীববিজ্ঞান ( Biology ) 

৩। রসায়ন ( Chemistry ) 

৪। কম্পিউটার সাইন্স 

৫। ইংরেজি সাহিত্য ( Literature in English ) 

৬। গণিত ( Mathematics ) 

৭। পদার্থ বিজ্ঞান ( Physics ) 

৮। মনোবিজ্ঞান ( Psychology ) 

যে কেউ চাইলে এর যেকোনো বিষয়ের উপর বিষয় ভিত্তিক জি আর ই টেস্ট দিতে পারবে । 

আর সাধারণ জি আর ই –এর অন্তর্ভূক্ত বিষয়গুলো হল , ভার্বাল রিজোনিং ( Verbal Reasoning ) , কোয়ান্টিটেটিভ রিজোনিং ( Quantitative Reasoning ) এবং এনালাইটিক্যাল রাইটিং স্কিলস ( Analytical Writing Skills ) । সাধারণ জি আর ই টেস্টের জন্য নির্ধারিত এই বিষয়গুলো সকলের জন্য একই রকমের হবেঃ

ভার্বাল রিজোনিং ( Verbal Reasoning ) : 

এই টেস্টের মাধ্যমে দেখা হবে পরীক্ষার্থীর ইংরেজী শব্দ ও বাক্যের উপর দক্ষতা কত । ইংরেজীতে আর্টিকেল লেখা থাকবে , সেই আর্টিকেলের বিষয়বস্তুগুলোকে ( বাক্য ) বিভিন্ন ভাগে ভাগ করতে হবে , এরপর প্রতিটি ভাগকে বিশ্লেষণ ও মূল্যায়ন করতে হবে ( শব্দগুলোর সাথে বিষয়বস্তুর সম্পর্ক বের করতে হবে ) । 

কোয়ান্টিটেটিভ রিজোনিং ( Quantitative Reasoning ) : 

এই অংশকে ম্যাথ সেকশনও বলা হয় । এই টেস্টের মাধ্যমে দেখা হবে পরীক্ষার্থীর গাণিতিক মৌলিক ধারনা এবং পরিমাণগত বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমে বীজগণিত , জ্যামিতি ও তথ্য বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা । 

এনালাইটিক্যাল রাইটিং স্কিলস ( Analytical Writing Skills ) : 

এই টেস্টের মাধ্যমে দেখা হবে পরীক্ষার্থীর যে কোনো ধরনের জটিল সমস্যা স্পষ্টভাবে ও সকল বিষয়াদি বিবেচনাধীন রেখে সমাধান করা । এই সমাধান পরিষ্কার ইংরেজীতে লিখতেও হবে । বাংলাদেশে জি আর ই পরীক্ষাকেন্দ্র আমেরিকান অ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশন। দুইটি সেশনে পরীক্ষা নেয়া হয়ঃ সকাল ৯.০০ মিনিটে এবং দুপুর ১.৩০ মিনিটে । 

নোটঃ দিনে দুইবার করে সপ্তাহে চার দিন পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ থাকলেও একজন পরীক্ষার্থী মাসে শুধু একবার এবং বছরে মাত্র পাঁচবার পরীক্ষা দিতে পারবেন । এর বেশি তাকে পরীক্ষা দিতে দেয়ার সুযোগ দেয়া হয় না । জি আর ই করে আমেরিকা যেতে খরচের বিস্তারিতঃ ( আনুমানিক ) 

👉জি আর ই রেজিস্ট্রেশন ফি = $ ১৮৫ ( প্রায় ১৪,৮০০ টাকা )

👉টোয়েফেল রেজিস্ট্রেশন ফি = $ ১৫০ ( প্রায় = ১২,০০০ টাকা ) 

👉 বিশ্ববিদ্যালয়ে ( চারটিতে ) আবেদন ফি = $ ২৫ x ৪ = $ ১০০ ( প্রায় ৮,০০০ টাকা ) 

👉 আবেদন পাঠানোর খরচ ( চারটি ঠিকানায় ) ২,০০০ টাকা x ৪ = ৮,০০০ টাকা সার্ভিস ফি = ১৬,০০০ টাকা = ভিসা ইন্টারভিউ ফি = ৯,০০০ টাকা ৭০,০০০ টাকা = 

👉প্লেন ফেয়ার = ★ মোট = ১,৩৭,৮০০ টাকা এখানে যে খরচের চিত্র দেখানো হলো , বাস্ততে তার সাথে কিছু পার্থক্য হতে পারে । যেমন , প্লেনের টিকেটের দাম নির্ভর করে কোন সময়ে টিকেট কাটা হচ্ছে এবং কোন এয়ারলাইন্সে কাটা হচ্ছে । ভিসা ইন্টারভিউ ফি বর্তমানে কিছু বাড়ানো হয়েছে । আর সব খরচ মোটামুটি একই রকম । জি আর ই পেয়িং সিস্টেম ( চেকের মাধ্যমে ) জি আর ই সেন্টারের ঢাকা অফিস থেকে চেক সংগ্রহ করে কুরিয়ারের মাধ্যমে আপনার গন্তব্যস্থল - এ পাঠানো যায় অথবা অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে ইউএস অবস্থিত জি আর ই সেন্টারগুলোর মাধ্যমে নির্দিষ্ট ঠিকানায় পেমেন্ট পৌঁছিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে । যদি ইউএস অফিস মাধ্যমে পেমেন্ট পৌঁছানোর দুটি উপায় রয়েছে 

👉 চেক সার্ভিসের ক্ষেত্রে ২০০০ টাকা অতিরিক্ত লাগবে । 

👉 উদাহরনস্বরূপ , $ ৭৫ ডলারের চেকের জন্য ৭৫০০ টাকার সাথে আরো ২০০০ টাকার লাগবে । 

👉 ইউএসএ অফিসে অনুরোধ অনুসারে $ ১২ ডলার অতিরিক্ত পে - এর মাধ্যমে আপনার কাঙ্ক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয়ে চেক পাঠানো যাবে । নোট : টেক্সাস অফিস থেকে ‘ ব্যাংক অব আমেরিকা ' ইস্যু করা হয় । জি আর ই পেয়িং সিস্টেম ( টেলিফোনের মাধ্যমে ) উল্লেখ্য যে , ফোনের মাধ্যমে ক্রেডিক কার্ড ইনফরমেশন সবসময় প্রতারণার ঝুঁকি থাকে । আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে যে আপনি টেলিফোন ব্যতিত অন্য কোন মাধ্যমে পেমেন্ট করেননি । বাংলাদেশের একমাত্র জি আর ই সেন্টার এ সার্ভিস দিয়ে থাকে । ফোনের মাধ্যমে জি আর ই এএসআর অর্ডার প্লেসিং এর জন্য এই সেবা পেতে লাগবে: 

👉 টোফেল একাউন্ট ইউজারনেম একাউন্ট পাসওয়ার্ড 

👉 আপনি যে তারিখের পরীক্ষার স্কোর পেতে চান সেই তারিখ ( টোফেল ছাড়া অন্যদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় ) এরপর ... 

👉 জি আর ই সেন্টার আপনার টোফেল কপির জন্য অনলাইনে পেমেন্ট করবে । ইটিএস সাধারণত ১৪ দিনের ভিতর টোফেল পেপার পাঠিয়ে থাকে । অর্ডারের দিন থেকে ৫ দিনের ভিতর এবং সর্বোচ্চ ১ মাসের অর্ডার এবং রিসিপ্ট কার্যক্রম সম্পাদন করা হয় ।

ইউএস অফিসে স্কোর কার্ড পৌঁছানোর পর ৩ দিনের ভিতর ফেডেক্স কুরিয়ারের মাধ্যমে ঢাকায় পাঠনো হয় । 

👉 ঢাকা অফিস থেকে পেপার কপি সংগ্রহ করতে হবে । 

নোট : জি আর ই স্কোর পেপার ইউএসএ অফিস থেকেও সংগ্রহ করা যাবে । নিন্মলিখিত তথ্যগুলোর জন্য ইটিএস হেড কোয়াটার থেকে কল করা হয় 

👉 জি আর ই রেজিস্ট্রেশন অনলাইন কনফার্মেশন অথবা রেজিস্ট্রেশন নাম্বার 

👉নামের প্রথম , মধ্যম এবং শেষ অংশের জন্য ★ জন্ম তারিখ লিঙ্গ 

👉 ই - মেইল 

👉ঠিকানা লাইন -১ ঠিকানা লাইন -২ 

👉 সিটি / শহর জিপ / পোষ্টাল কোড 

ফোন নং অতিরিক্ত ফোন নং 

👉 জি আর ই - এর তারিখ 

👉ভার্বাল , কোয়ানটিটেটিভ এবং রাইটিং সেকশনের 

👉 ই - মেইল আইডি মাই জি আর ই ইউজার নেম 

👉 মাই জি আর ই পাসওয়ার্ড 


জি আর ই ( GRE ) –এর অনন্যতা প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতির সাথে জি আর ই , জিম্যাট এর কিছু পার্থক্য আছেঃ 

👉প্রচলিত পরীক্ষা হয় কাগজ কলমে , আর জি আর ই , জিম্যাট পরীক্ষা হয় কম্পিউটারে । 

👉প্রচলিত পরীক্ষায় ভাবমূলক বা সাবজেকটিভ ধরণের প্রশ্ন থাকতে পারে , যার উত্তর এক এক রকম হলে মার্কস ও এক এক রকম হতে পারে । জি আর ই বা জিম্যাটের অ্যানালাইটিক্যাল রাইটিং অংশ ছাড়া ম্যাথ ও ভার্বাল অংশের সব প্রশ্নই অবজেকটিভ ধরণের হবে , অর্থাৎ এক বা একাধিক উত্তর থাকবে কিন্তু ঠিক ওগুলোই সঠিক উত্তর । এক এক জন একেক রকম উত্তর দিয়ে সঠিক মার্কস পেতে পারবে না । জি আর ই পরীক্ষার অংশগুলোঃ পরীক্ষাটি প্রধানত তিনটি অংশে বিভক্তঃ 

১। রাইটিং অংশে ইস্যু ও আর্গুমেন্ট এই দুই ধরনের লেখা লিখতে হবে কম্পিউটার কী - বোর্ড দিয়ে ।

২। ভার্বাল অংশে যা যা থাকবেঃ 

👉 Reading comprehension from short , medium or long passages ( জি আর ই'র মোট ভার্বাল প্রশ্নের অর্ধেকই হবে এরকম প্রশ্ন ) 

👉Text Completion বা এক কথায় শূন্যস্থান পূরণ । তবে বাক্যের মধ্যে একটি , দুইটি এমনকি তিনটি পর্যন্ত শূন্যস্থান থাকতে পারে । Sentence Equivalence : একটা বাক্যের মধ্যে একটি শূন্যস্থান থাকবে , নীচে ছয়টি শব্দ অপশন দেওয়া থাকবে যার মধ্যে যে কোন দুটি হবে সঠিক এবং চারটি ভুল ।

৩। ম্যাথ অংশে যা যা থাকবেঃ 

👉 Quantitative comparison . পাশাপাশি দুটি কলাম ( এ এবং বি ) দিয়ে বলবে কোনটা বড় বের কর । 

👉Discrete mathematical problems : সরাসরি অংক কষে তার উত্তর বের করতে হবে । পরীক্ষার্থীর কর্মকাণ্ড তারা ক্লোস সার্কিট ক্যামেরায় দেখতে পারেন ।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ