Image source from creazilla.com |
১. পেঁয়াজ কাঁটার সময় চোখ দিয়ে পানি বের হয় না, এমন মানুষ পাওয়া ভার। মূলত পেঁয়াজের এনজাইম আমাদের চোখ জ্বলা এবং চোখ দিয়ে পানি পড়ার মূল কারণ। তাই এক কাজ করুন।পেঁয়াজের খোসা ছাড়িয়ে আধা ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন অথবা ফ্রিজে রেখে দিন তারপর কাটুন।এরপর ভালো করে ধুয়ে নিয়ে কেটে ফেলুন পেঁয়াজ। ঠাণ্ডায় পিঁয়াজের এনজাইম নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়, যার কারণে চোখ জ্বলার সম্ভাবনা কমে যায়। দেখবেন আর চোখ দিয়ে পানি পড়ছে না।
২. খেজুরের গুড় দিয়ে পায়েস তৈরি করতে গেলে অনেক সময় দুধ ফেটে যায়। দুধ ঘন হয়ে গেলে নামিয়ে একটু ঠান্ডা করে তারপর গুড় মেশান। ভাল করে নেড়ে আবার কিছুটা ফুটিয়ে নিবেন, দেখবেন দুধ আর ফাটছে না।
৩. কাঁচা মরিচের কাণ্ড ফেলে তারপর সংরক্ষণ করুন। এতে মরিচ অনেক দিন পর্যন্ত ভাল থাকবে।
৪. সেমাই রান্না করার আগে সেমাই হালকা করে ভেজে নিন এতে করে রান্নার সময় সেমাই সহজে গলে যাবে না।
৫. ধনে পাতা মসলিন বা পাতলা কাপড়ের ব্যাগে ভরে ফ্রিজে রেখে দিন। এভাবে রাখলে অনেক দিন পর্যন্ত ধনে পাতা ভাল থাকবে।
৬. আলু ও বেগুণ কাটার পর রেখে দিলে কালো হয়ে যায়। আলু ও বেগুন কাটার পর পানিতে ভিজিয়ে রাখুন দেখবেন আর কালো হচ্ছে না।
৭. বাদাম ভাজতে সাধারণত তেল বেশি লাগে। কিন্তু বাদাম ভাজার আগে তেল মেখে তারপর তাওয়া বা ফ্রাইপ্যানে ভাজুন তবে তেল কম লাগবে।
৮. সবজি সিদ্ধ করার পর পানিটি ফেলে দিবেন না। এটি অন্য কোন রান্নার স্টক হিসেবে ব্যবহার করুন। দেখবেন রান্নার স্বাদ বেড়ে গেছে বহুগুণ।
৯. ওল, কচু বা কচুশাক রান্নার সময় কিছুটা তেঁতুল বা লেবুর রস ব্যবহার করুন। এতে আর গলা চুলকাবে না।
১০. রান্নায় খাবারের মান ভাল রাখতে তরকারি বড় বড় টুকরো করে কাটুন।
Image source from creazilla.com |
১১. সাধারণত মুগের ডাল ও সুজিতে খুব দ্রুত পোকা ধরে যায়। এই পোকার হাত থেকে মুক্তি পেতে মুগের ডাল বা সুজি হালকা করে ভেজে ঠাণ্ডা করে নিন। তারপর কৌটার মাঝে ভরে রাখুন। সুজি চাইলে ফ্রিজেও রাখতে পারেন, পোকা ধরবে না।
বুটের ডালে পোকা হওয়া ঠেকাতে ফ্রিজে রাখতে পারেন। এছাড়াও কৌটায় তেজপাতা দিয়ে রাখতে পারেন। তবে বুটের ডাল মাঝে মাঝেই বের করে রোদে দেবেন।
চাল, মসুরির ডালে পোকা হওয়া ঠেকাতে বেশ কিছু আসল তেজপাতা (বাজারে নকল তেজপাতাও বিক্রি হয়) চাল-ডালের কৌটার মাঝে ভালো করে মিশিয়ে রাখুন।
১২. রান্না করা খাবার ফ্রিজে রাখলেও ২/১ দিনে গন্ধ হয়ে যায়? রোজ একবার বের করে ভালো মত চুলায় জ্বাল দেবেন। তারপর ঠাণ্ডা করে ফ্রিজে রাখবেন। বেশ কয়েকদিন রেখে খাওয়া যাবে।
১৩. পেঁয়াজকে সংরক্ষণ করতে চাইলে ভালো করে বেছে নিন। তারপর রোদে শুকিয়ে ঝরঝরে করে ফেলুন। তারপর একটি ঝুড়িতে খবরের কাগজ বিছিয়ে তাঁর মাঝে পেঁয়াজ রেখে দিন। কোন সবজি বা ফলের সাথে রাখবেন না।
রসুনকে পেঁয়াজ ও আদার সাথে রাখার ভুল সকলেই করেন। এতে রসুন দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। রসুনকে ঝেড়ে বেছে ঘণ্টা দুয়েক রোদে শুকিয়ে ঝুড়িতে ভরে রেখে দিন। এমনিতেই ভালো থাকবে।
১৪. ভিজিয়ে রাখা ছাড়াই নরম ও সুস্বাদু ছোলা ভুনা খেতে চান?ছোলা ভালো করে ধুয়ে একটি বড় পাত্রে নিন।তারপর ফুটন্ত গরম পানি ছোলার মাঝে দিয়ে দিন। পাত্র ঢাকনা দিয়ে রাখুন। এভাবে রেখে দিন ১৫ থেকে ২০ মিনিট।এবার প্রেসার কুকারে ছোলাগুলো পানি সহ দিয়ে দিন। এমনভাবে পানি দেবেন যেন ছোলা ভালো মত ডুবে থাকে পানিতে।প্রেসার কুকার চুলায় বসিয়ে দিন বেশী আঁচে। সিটি বাজা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। ৩ থেকে ৫ টি সিটি বাজলেই চুলা নিভিয়ে দিন। চুলা থেকে কুকার সরাবেন না, সেভাবেই রেখে দিন। প্রেসার কুকার থেকে সমস্ত বাষ্প নিজে নিজে বের হয়ে যেতে দিন। তারপর খুলে দেখুন, আপনার ছোলা সিদ্ধ তৈরি। এবার এই ছোলাকে পছন্দমত রান্না করে নিন।
১৫. ডিম সিদ্ধ করতে পানিতে সামান্য লবন দিন। ডিম খেতে সুস্বাদু হবে। গরমাবস্থায় ডিম ছিলবেন না, ঠান্ডা করে ছিলুন এতে খোসায় লেগে ডিম নষ্ট হবে না।
১৬. প্যানে হালুয়া দেয়ার আগে বেশী করে ঘি বা তেল দিন। তারপর ভালো করে ছড়িয়ে গরম হতে দিন। ভালো মত গরম হলে তবেই হালুয়া দেবেন। নাড়তে নাড়তে হালুয়া যখন বুঝবেন প্রায় হয়ে এসেছে, এই সময়টাতেই আসলে তলায় লেগে যায়। সেটা রোধ করতে একটি তাওয়া বসিয়ে দিন চুলায়। তারপর তাঁর ওপরে হাঁড়ি বা কড়াই রেখে হালুয়া তৈরি করুন। এতে হালুয়া আপনার কড়াইয়ের তলায় লেগে পুড়বে না আর পুড়ে যাওয়ার ভয়ে ঘন ঘন নাড়তেও হবে না!
১৭. কাঁচা মরিচ কাটা বা কাঁচা মরিচ দিয়ে ভর্তা জাতীয় কিছু মাখালে হাতে ঝাল লাগবেই। এই সমস্যা দূর করতে মরিচ ধরার আগে হাতে সরিষার তেল মেখে নিন ভালো করে। তারপর তেল মাখা হাতে মরিচ ধরুন। দেখবেন হাতে ঝাল লাগবে না এবং হাত জ্বলবে না। এরপর কাজ শেষে হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেললেই তেলের সাথে ঝালের যন্ত্রণাও মিটে যাবে।
১৮. মসলার কারণে মাছ ভাজার সময় তেল ছিটে হাতে পড়ে অনেক সমস্যার সৃষ্টি করে।চুলার পাশে লবণের বয়াম রয়েছে কিনা দেখুন তো। তেল ছিটে উঠলে খানিকটা লবণ ছিটিয়ে দিন। দেখবেন তেল একেবারেই ছিটাবে না।
১৯. অনেক সময় দেখা যায় আলু সিদ্ধই হতে চায় না। তরকারি ছাড়া আলাদা করে আলু সিদ্ধ করার প্রয়োজন হলে পানিতে দিয়ে দিন কয়েক ফোঁটা সাদা ভিনেগার। এতে আলু সিদ্ধ হয়ে যাবে চমত্কারভাবে।
Image source from creazilla.com |
২০. ঘি এর মত দামী জিনিসে কীভাবে টাকা বাঁচাবেন? ঘি এর সাথে তেল মিশিয়ে ব্যবহার করুন। পরোটা হোক বা পোলাও-বিরিয়ানি, সয়াবিন তেলের সাথে ঘি যোগ করে তেলের ফ্লেভার বাড়িয়ে নিন। তারপর সেটা দিয়ে রান্না করুন। স্বাদে কোন হেরফের হবে না।
২১. যেকোনো খাবারের আকর্ষণীয় দিকটি হলো এর রং। কিন্তু সবজি রাঁধতে গেলেই তাপে এর আসল রং আর থাকে না। সবজির স্বাদ আর রং ঠিক রেখে রাঁধতে চান? জেনে নিন একটি সহজ কৌশল। সবজি সেদ্ধ করার সময় কয়েক ফোঁটা ভিনেগার দিয়ে দিন। সবজির রং থাকবে একেবারে ঠিকঠাক। এমনকি রান্না হয়ে যাবার পরও।
২২. খাবার তৈরির এক অন্যতম উপাদান হলো সয়াবিন তেল। ভাজি হোক আর তরকারি, তেল লাগবেই। অনেক সময় দীর্ঘদিন ঘরে সয়াবিন তেল সংরক্ষণ করলে তেল কেমন ঘোলাটে হয়ে যায়। কী করে তেল ঠিক রাখবেন? জেনে নিন। সয়াবিন তেল যে পাত্রেই রাখুন না কেন, তেলের সাথে মিশিয়ে দিন সামান্য একটু লবণ। তেল আর তার রং হারিয়ে ঘোলাটে হবে না।
২৩. তরকারি ঝাল না করেও কাঁচা মরিচের সুঘ্রাণ পেতে চান? তরকারি স্বাভাবিক ভাবেই রান্না করুন। চুলা থেকে নামানোর মিনিট পাঁচেক আগে কয়েকটি কাঁচা মরিচের বোঁটা ফেলে গোড়ার দিকটা গোল করে সামান্য একটু কেটে ফেলে তরকারিতে দিয়ে দিন। তরকারি ঢেকে দিন এবং পাঁচ মিনিট পর নামিয়ে ফেলুন। এতে তরকারি ঝাল হবে না অথচ কাঁচা মরিচের চমত্কার সুঘ্রাণে ম ম করবে।
২৪. বাজার থেকে কেনার বদলে বাড়িতে তৈরি আলুর চিপস অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর। চিপস তৈরির আলু আগের দিন রাতেই পাতলা স্লাইস করে কেটে নিন। লবণ দিয়ে মেখে একটি ডালায় বা ঝাঝড়িতে ছড়িয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। কোনো পানি যেন জমে না থাকে। ভাজার আগে ফ্রিজ থেকে বের করে নিন। এভাবে তৈরি করা আলুর চিপস হবে একদম মুচমুচে!
২৫. ভেজালের ভিড়ে আসল জিনিস খুঁজে পাওয়াটাই কঠিন। নিত্যপ্রয়োজনীয় মশলা এলাচের নির্যাস বের করে নিয়ে তা খোলা বাজারে বিক্রি করা হয়। এলাচের ভালো-মন্দ চিনে নিতে চান? এলাচের খোসা খুলে ভেতরটা দেখুন। যদি দেখেন এলাচের বীজ একটার সাথে আরেকটা আঠালোভাবে লেগে আছে তাহলে বুঝবেন, এটা একদম ঠিক আছে। আর যদি বীজ শুকনো থাকে বা আলাদা থাকে তাহলে বুঝবেন এর থেকে আগেই নির্যাস বের করে নেয়া হয়েছে।
২৬. মাছ খেতে গিয়ে গলায় একবারও কাঁটা বেঁধেনি, এমন বাঙালি বোধহয় খুঁজে পাওয়া যাবে না। বারো মাস পাওয়া যায় বলে কলাকে ফল হিসেবে অবহেলা করলেও কলা কিন্তু কাঁটা নামাতে খুবই উপকারী।গলায় কাঁটা বিঁধলে মুখভর্তি পাকা কলা নিয়ে হালকা করে চিবিয়ে গিলে ফেলুন। পিচ্ছিল কলার সাথে গলায় বিঁধে থাকা কাঁটাও নেমে যাবে।
২৭. ঝামেলা কমানোর জন্য অনেকেই একবারে অনেকগুলো পেঁয়াজ কেটে ফ্রিজে রেখে দেন। ফ্রিজে যেকোনো জিনিস দীর্ঘদিন ভালো থাকে, এটা ঠিক। তবে পেঁয়াজ বেশিদিন রেখে দিলে তা থেকে কেমন যেন টকটক গন্ধ আসতে থাকে আর স্বাদও কমে যায়। তবে এ সমস্যারও সমাধান রয়েছে।পেঁয়াজ যে পাত্রে রাখবেন সেটা প্রথমে শুকনো করে মুছে নিন। পাত্রের তলায় সামান্য লবণ ছিটিয়ে দিয়ে পেঁয়াজ রাখুন। ওপরে আবার লবণ ছিটিয়ে দিন। এভাবে রাখলে পেঁয়াজে টকটক গন্ধ হবে না, স্বাদও থাকবে একদম টাটকা!
২৮. ভাত রান্না করার সময় আমরা এর মাড়টুকু ফেলে দেই। এই মাড়ের সাথেই ফেলে দেই ভাতের বেশিরভাগ পুষ্টিগুণ। মাড় ফেলে না দিয়ে বরং এটা খাদ্যতালিকায় রাখুন। স্যুপের মতো করে খেতে পারেন অথবা দুধ-চিনি মিশিয়েও খেতে পারেন। নিয়মিত ভাতের মাড় খেলে ধীরে ধীরে আপনার ওজন বাড়তে থাকবে।
২৯. পোলাও, খিচুড়ি বা বিরিয়ানিতে গলে যাওয়া ভাব? পাতিলের মুখে একটি নরম তোয়ালে চাপা দিন। তার ওপরে ঢাকনা আটকে দম দিন। পানি বাষ্প হয়ে উড়বে এবং তোয়ালে সেটা টেনে নেবে। বেশি নাড়াচাড়া করবেন না। আধা ঘণ্টা দম দিন, অনেকটাই ঝরঝরে হয়ে আসবে।
৩০. পোলাও, বিরিয়ানি বা খিচুড়ি রাঁধতে গিয়ে যদি পানি দেয়ার পর পরই বুঝতে পারেন যে পানি বেশি হয়ে গেছে ও এতে বিরিয়ানি বা খিচুরিটা গলে যাবে, তাহলে সাথে সাথে আলু কেটে এর মাঝে দিয়ে দিন। আলু সিদ্ধ হতে বাড়তি পানি প্রয়োজন। বেশি দিয়ে ফেলা পানিটা আলু টেনে নিয়ে সিদ্ধ হবে। আর আপনার খাবারেও পানি অনুপাত ঠিক হয়ে আসবে।
৩১. শীতকালে দীর্ঘ সময় ধরে দরজা-জানালা বন্ধ থাকে বলে ঘরে কেমন দমবন্ধ করা গন্ধের সৃষ্টি হয়। জানালা খুললেই ঠান্ডা বাতাস, তাই ঘরে ফ্রেসনেস পাওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই। বন্ধ ঘরেও পেতে চান ফ্রেসনেস? তাহলে জেনে নিন কৌশলটি। লেবু খাবার পর খোসাগুলো ফেলে দেবেন না। খোসাগুলো ভালো করে পানিতে ধুয়ে নিন। একটি পাত্রে পানি নিয়ে খোসাগুলো তাতে বেশ কিছুক্ষণ ধরে ফুটান। এবার পাত্রটি ঘরে নিয়ে আসুন। কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখবেন ঘরের বদ্ধভাব দূর হয়ে গেছে।
৩২.যখন আপনি কফি বানাবেন তখন যদি ভুল করে কফি খুব বেশি তেতো হয়ে যায়, তখন ২ চিমটি লবন দিয়ে দিন সেখানে দেখবেন কফির তেতা ভাবটি নিমিষেই দূর হয়ে যাবে। তখন কফি খেতে মোটেও খারাপ লাগবেনা।
৩৩. সাদা সেমাই ভাজতে অনেকেই ঘি ব্যবহার করেন। কিন্তু ভাজা সেমাইয়ের গন্ধে ঘি-এর গন্ধটা অনেকটাই চাপা পড়ে যায়। আর ঘি-এর গন্ধটা রাখতে চাইলে দিতে হয় অনেক বেশি ঘি। তবে একটি ছোট্ট কৌশলে সামান্য ঘি ব্যবহার করেই সেমাইয়ে ধরে রাখতে পারবেন ঘি-এর সুবাস। তেল বা ঘি কোনোকিছু না ব্যবহার করেই সাদা সেমাই লালচে করে ভেজে নিন। দুধ-চিনি দিয়ে স্বাভাবিকভাবেই রান্না করুন। সেমাই নামানোর ঠিক আগে এর উপরে সামান্য ঘি ছড়িয়ে দিন। সেমাই নামিয়ে একবার নেড়ে দিন।
আরও পড়ুন : যেকোনো খাবারে লবণ কমানোর উপায়
0 মন্তব্যসমূহ