ইংরেজি অভিধান অনুযায়ী ডেঙ্গু শব্দটির প্রকৃত উচ্চারণ হবে ডেঙ্গি । ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত রোগ । ডেঙ্গু মশাবাহিত একটি মারাত্মক রোগ । ডেঙ্গু জ্বর দু'প্রকার- ক্লিনিক্যাল ও হেমোরেজিক । ডেঙ্গু রোগের আক্রমণে মানব দেহের রক্তের প্লাটিলেটের সংখ্যা দ্রুত হ্রাস পায় । মানব দেহের রক্তে স্বাভাবিক প্লাটিলেটের পরিমাণ প্রতি কিউবিক মিলি মিটারে দেড় লাখ থেকে সাড়ে তিন লাখ ।
Image from PxHere |
ডেঙ্গুর তেমন কার্যকরী প্রতিষেধক নেই । এ থেকে বাঁচার উপায় হচ্ছে একে প্রতিরোধ করা । ডেঙ্গু কী ? এডিস মশাবাহিত ৪ ধরনের ভাইরাসের যে কোনো একটির সংক্রমণে যে অসুস্থতা হয় সেটাই ডেঙ্গু । এর সাধারণত দু'টো ধরন রয়েছে । এক . ক্লিনিক্যাল ডেঙ্গু জ্বর , দুই , হেমোরেজিক ডেঙ্গুজ্বর বা ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার । শেষেরটাই সবচেয়ে ভয়াবহ ।
ডেঙ্গু ভাইরাস
ডেঙ্গুর লক্ষণ
Mikael Häggström, Public domain, via Wikimedia Commons |
ডেঙ্গু হেমোরেজিক ( রক্তক্ষরণ ) জ্বর
রক্ত পরীক্ষার যদি অণুচক্রিকা বা প্লাটিলেট সংখ্যা কমে যায় তবে বুঝতে হবে এটি হেমোরেজিক বা রক্তক্ষয়ী জ্বর । রোগীর শকে চলে যাওয়া বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া , অস্থিরতা , অবসন্নতা পেটে তীব্র ব্যথা , হাত - পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া , ত্বক কুঁচকে যাওয়া , রক্তচাপ কমে যাওয়া কিংবা বেশি বেশি প্রস্রাব হওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখামাত্র রোগীকে হাসপাতালে স্থানান্তর করতে হবে । পুনরায় রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে । প্রচুর তরল খাবার খাওয়াতে হবে । বিশুদ্ধ পানি প্রচুর পরিমাণে পান করাতে হবে । সেই সঙ্গে প্রস্রাবের পরিমাণ মনিটর করতে হবে । সময়মতো সঠিক ব্যস্থাপনায় ডেঙ্গু হেমোরেজিক জ্বরও সারিয়ে তোলা যায় । বেশি রক্তক্ষরণ হলে ফ্রেশফ্রোজেন প্লাজমা কিংবা কনসেন্ট্রেটেড প্লাটিলেট অথবা প্রয়োজনে পূর্ণ রক্ত পরিসঞ্চালনের মাধ্যমে চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে ।
চিকিৎসা
সত্যিকার অর্থে ডেঙ্গুর সুনির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই । উপসর্গ অনুযায়ী রোগের চিকিৎসা করা হয় । বেশির ভাগ ডেঙ্গু জ্বরই সাত দিনের মধ্যে সেরে যায় , অধিকাংশই মারাত্মক নয় । প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণে পানি , বিশ্রাম ও প্রচুর তরল খাবার । সঙ্গে জ্বর কমানোর জন্য এসিটামিনোফেন ( প্যারাসিটামল ) গ্রুপের ওষুধ । সাধারণ ডেঙ্গুর চিকিৎসা এই । তবে ব্যথানাশক ওষুধ হিসেবে এসপিরিন বা ক্লোফেনাক জাতীয় ওষুধ দেয়া যাবে না । এতে রক্তক্ষরণ বেড়ে যেতে পারে । হেমোরেজিক বা রক্তক্ষয়ী ডেঙ্গু ( যা খুবই কম হয়ে থাকে ) বেশি মারাত্মক । এতে মৃত্যুও হতে পারে । জ্বর , সঙ্গে রক্তক্ষরণের লক্ষণ দেখামাত্র হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে বিশেষ চিকিৎসার জন্য । জ্বর কমানোর জন্য বারবার গা মোছাতে হবে ভেজা কাপড় দিয়ে । এক্ষেত্রে রোগীকে শিরাপথে রক্তের প্লাটিলেট ট্রান্সফিউশন করতে হবে । ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগীকে মশারির মধ্যে রাখা জরুরি ।
সতর্কতা ও প্রতিরোধ
0 মন্তব্যসমূহ