Image by iXimus from Pixabay |
আমরা অনেক সময় পছন্দের স্মার্টফোনটির অধিক যত্ন নেয়ার নামে অজান্তেই অনেক ক্ষতি করে ফেলি ।তাই একজন অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারী হিসেবে আপনাকে উল্লেখিত টিপসগুলো জানা দরকার ।ফলে আপনি জানতে পারবেন ফোনটির সাথে কি করা ঠিক এবং কি করা ঠিক নয় ।
১. অপরিচিত সোর্স থেকে অ্যাপ ইন্সটল করা
অনেকেই নতুন ফোন কেনার পরেই, অ্যাপস দরকার? গুগলে সার্চ করে যেকোনো ওয়েবসাইট থেকে .apk ফাইল ডাউনলোড করে ইন্সটল করে নিলেন যা একবারে উচিত নয় । কারণ এসমস্ত ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোডকৃত অ্যাপসগুলোর উপর গুগলের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না । অনেক সময় দেখা যায় অনেক পেইড বা প্রিমিয়াম অ্যাপ এসমস্ত ওয়েবসাইট গুলোতে ফ্রিতে পাওয়া যায় যা মূলত MOD অ্যাপ যাতে বিভিন্ন স্পিসিয়াস ম্যালওয়্যার থাকে আপনার ফোনের বিভিন্ন তথ্য গুপ্তচরবৃত্তির মাধ্যমে হাতিয়ে নিতে পারে । তাই অবশ্যই সবসময় গুগল প্লে-স্টোর কিংবা বিশ্বস্থ সোর্স থেকেই অ্যাপস ইন্সটল করুন ।
২. রিসেন্ট অ্যাপসগুলো বার বার ক্লিন করা
অনেক অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীর মধ্যে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে যে, রিসেন্ট ট্যাবের অ্যাপগুলো বার বার ক্লিন করলে ফোন সুপার ফাস্ট হয়! এটা করা আপনার ফোনের জন্য খুব ক্ষতিকর । অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনগুলো এমনিতেই খুব স্মার্ট! অ্যান্ড্রয়েড অটোমেটিকভাবে ব্যবহারকৃত অ্যাপসগুলোর ইউসএজ ডাটা অপ্টিমাইজ করে এবং কিছু ইনফরমেশন ক্যাশড ডাটা হিসেবে সংরক্ষণ করে রাখে যাতে অ্যাপগুলো অপেন করলে বার বার শুরু থেকে লোড নিতে না হয় । তাছাড়া ফোনের র্যাম ফুরিয়ে এলে এটি নিজে থেকেই কিছু অ্যাপস বন্ধ করে দেয় নতুন অ্যাপসগুলোর জন্য । তাই বারবার অ্যাপস কিল করলে অ্যাপগুলো পুনরায় প্রথম থেকে সকল ডাটা লোড হয় যা ডিভাইসের ব্যাটারি ও প্রসেসরের ওপর খারপ প্রভাব পড়ে ।
৩. অপারেটিং সিস্টেম আপডেট করুন
Image by Markus Winkler from Pixabay |
ফোনের পারফরম্যান্স এবং সিকিউরিটি সুরক্ষা বৃদ্ধির জন্য বাগ ফিক্স করার পরই সংশোধনসহ সর্বশেষ আপডেটগুলো আসে । তাই আপনার অ্যান্ড্রয়েডের অপারেটিং সিস্টেমটি যখনই উপলভ্য হলে অবশ্যই আপডেট করুন ।
৪. ব্যাটারি সেভার অ্যাপ
সাধারণত আমরা ব্যাটারি সেভার বা ক্লিনার অ্যাপ ব্যবহার করি কারণ ফোনের দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি ব্যাকআপ চাই! এবং এটি সুপার হিরোর মতো ব্যাটারি পাওয়ার সেভ করে । কিন্তু আপনি হয়ত জানেন না যে, এটি ফোনের আয়ু কমিয়ে দেয়! এর প্রধান কাজ হচ্ছে রিসেন্ট অ্যাপগুলোকে কিল করা যা আগের পয়েন্টেই বলেছি কেন খারাপ । তবে ব্যাটারি সেভার আরও কিছু কাজ করে যেমন-ব্লুটুথ, ওয়াই-ফাই, হট-স্পট, লোকেশন, ডাটা কানেকশন ইত্যাদি অন-অফ করা যেগুলো আমরা নিজে থেকেই ম্যানুয়ালি করতে পারি যার জন্য আলাদা কোনো অ্যাপস ইন্সটল করার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না ।
৫. লাইট (Lite) সংস্করণের অ্যাপ ব্যবহার করুন
আপনি শুধু ফোনের বিভিন্ন অ্যাপগুলোর লাইট (Lite) সংস্করণগুলো ব্যবহার করেই ফোনে ৬০% পর্যন্ত কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারেন । লাইট সংস্করণ হচ্ছে মূল অ্যাপ্লিকেশনের ছোট ও হালকা সংস্করণ । লাইট সংস্করণের অ্যাপগুলো বিশেষভাবে কম কনফিগারেশন সমৃদ্ধ ফোনগুলোর জন্য তৈরি করা হয় যা মূল অ্যাপ এর তুলনায় অনেক দ্রুত, অনেক কম জায়গা নেয়, র্যাম কম খরচ করে, কম মোবাইল ডাটা খরচ করে এবং অনেক কম পাওয়ার কনজিউম করে ।
৬. সঠিক চার্জিং পদ্ধতি
Image by Hannes Edinger from Pixabay |
স্মার্টফোনের ব্যাটারি লাইফ ভালো রাখতে হলে- বারবার চার্জে না দিয়ে কেবল মাত্র যখন ব্যাটারি লাইফ ৪০% শতাংশের কম হবে তখনি চার্জ করুন ।তাছাড়া প্রতিদিন পুরোপুরি ১০০% শতাংশ চার্জ না দিয়ে ৯০% থেকে ৯৫% শতাংশ পর্যন্ত চার্জ দিন এবং প্রতি সপ্তাহ বা দশদিন অন্তর অন্তর ১০০%শতাংশ চার্জ করুন ।এতে ব্যাটারি হেলথ ভালো থাকবে ।আপনার ফোনকে অতিরিক্ত চার্জ করবেন না, অনেকেই ফোনকে রাতে চার্জ দিয়ে ঘুমাতে যান যা করা ঠিক হবে না ।এটি ব্যাটারি ডেমেজ হওয়ার প্রধান কারণ ।
৭. রিস্টার্ট/ রিবুট করুন
আপনার স্মার্টফোনটি কোনো কম্পিউটার থেকে কোনো অংশে কম নয় ।তাই কম্পিউটারের মতো হাতে থাকা স্মার্টফোনটিকেও সমস্ত প্রোগাম সুচারুভাবে পরিচালনার জন্য মাঝে মাঝে রিস্টার্ট বা রিবুটের প্রয়োজন হয় ।তাই অত্যন্ত সপ্তাহে একবার হলেও আপনার ফোনটি রিস্টার্ট করুন ।
৮. যথেষ্ট জায়গা খালি রাখুন
ফোনের রম ও এক্সটার্নাল এসডি কার্ডে নূন্যতম অর্ধেক স্পেস খালি রাখুন । ফোনের বেশির ভাগ জায়গা জুড়ে ছবি, মিউজিক ফাইল, ভিডিও ফাইল সমূহ থাকে । এদের মধ্যে অনেক ফাইল বা অ্যাপস রয়েছে যেগুলো দরকার নেই কিংবা অনেক ডুপ্লিকেট ফাইল রয়েছে সেগুলো মুছে ফেলতে পারেন ।তাছাড়া ফোনের স্টোরজ কম মনে হলে ফ্রি ক্লাউড স্টোরেজ ব্যবহার করতে পারেন ।
৯. ডার্ক মোড ও ডার্ক ওয়ালপেপার
সাধারণত আপনি যখন অধিক লাইটফুল ওয়ালপেপার ব্যবহার করবেন তখন ফোন অধিক পাওয়ার কনজিউম করে । এতে আপনার ফোনের চার্জ দ্রুত ফুরিয়ে আসে এবং কিছুটা ল্যাগি হয়ে যায় । তাই যতটা সম্ভব ডার্ক ওয়ালপেপার সেট করুন এবং অন্যান্য অ্যাপগুলোতে ডার্ক মোড অন করে ব্যবহার করুন ।
১০. অ্যান্ডয়েড ফোনের অন্যান্য সতর্কতা
অধিক উষ্ণতা ফোনের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর ।ফোন চার্জে লাগিয়ে ব্যবহার করা ঠিক নয় ।প্রয়োজন না হলে সেলুলার ডাটা, ওয়াই-ফাই, হটস্পট, ব্লুটুথ ইত্যাদি বন্ধ করে রাখতে হবে । তাছাড়া অনেক সময় ফোনের কেসিং এর কারণে নিজে থেকেই ওভার হিটিং সমস্যা হয় ।পারলে চার্জিংয়ের সময় কেসিং খুলে চার্জ দেওয়া ভালো । তাই ফোনের সুরক্ষার জন্য ভালো কেসিং ব্যবহার করতে হবে যেটি হিট অবজার্ব করতে পারে ।
অন্যদিকে পানি হচ্ছে স্মার্টফোনের বড় শত্রু । বেশিরভাগ স্মার্টফোন পানির সংস্পর্শেই নষ্ট হয় এবং সিএনজি বা ফুয়েলিং স্টেশনেও ফোন ব্যবহারে বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে ।
0 মন্তব্যসমূহ