Image by PourquoiPas from Pixabay |
সাম্প্রতি বিজ্ঞানীরা বিখ্যাত বা সফল মানুদের মধ্যে থাকা অভ্যাস, চিন্তার ধরন ও কাজ করার প্রকৃতিগুলো নিয়ে এক বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান করেছেন । এগুলোর মধ্যে কিছু অভ্যাস, চিন্তার ধরন বা কাজের প্রকৃতি রয়েছে যা সবার মধ্যেই কম-বেশি কমন বা সাধারণ । তাই উক্ত অভ্যাসগুলো নিজের অভ্যাসগুলো মিলিয়ে দেখুন তাহলে জানতে পারবেন আপানি আসলে জিনিয়াস বা বুদ্ধিমান ব্যক্তি কিনা?
১. জন্মগত জিনিয়াস
গবেষণায় দেখা গেছে, সন্তানদের মধ্যে প্রথম জন্মগ্রহণকারী ছেলে অথবা মেয়ে অন্যদের তুলনায় অধিক বুদ্ধিমান এবং অধিক আইকিইউ নিয়ে জন্মায় । তাই আপনি যদি ভাই-বোনদের মধ্যে বড় হয়ে থাকেন তাহলে আপনি জন্মগতভাবেই জিনিয়াস ব্যক্তি ।
২. সৃজনশীল চিন্তা-ভাবনা
জিনিয়াস ব্যক্তিদের চিন্তা-ভাবনায় মধ্যে সৃজনশীলতা ছাপ পাওয়া যায় । উনারা গড়পড়তা সাধারণ মানুষদের থেকে যেকোনো কাজ একটু সৃজনশীল উপায়ে করতে ভালোবাসেন ।আপনার মধ্যে এই বৈশিষ্ট্য থাকলে আপনিও একজন জিনিয়াস ।
৩. অলসতা
আপনি মানুন বা নাই মানুন, এটা সায়ন্টিফিক ভাবে প্রমাণিত যে, বুদ্ধিমান বা জিনিয়াসরা সাধরণত অন্যদের তুলনায় বেশি অলস হয়ে থাকে । এর পিছনে বৈজ্ঞানিক কারণ হচ্ছে, আমরা যেসব খাবার খেয়ে থাকি তা আমাদের শরীর শক্তি সঞ্চয় করে তার মধ্যে থেকে ২০শতাংশ আমাদের মস্তিষ্ক ব্যবহার করে থাকে ; যেহেতু জিনিয়াসরা অন্যদের তুলনায় নিজের মস্তিষ্কের ব্যবহার বেশি করেন এবং জলদি ক্লান্ত হয়ে যান আর এ কারণেই তারা অলসও হয়ে থাকেন বটে । তাছাড়া অলস ব্যক্তিরা সবসময় যেকোনো কাজ সবচেয়ে সহজভাবে কিংবা সর্টকাট উপায়ে করার পদ্ধতি অনুসরণ করেন ।
৪. কম সামাজিক
গবেষণায় দেখা গেছে জিনিয়াসরা তাদের বেশির সময় একা থাকতেই পছন্দ করেন । যেহেতু তাদের চিন্তা-ভাবনা ও শখ অন্যদের তুলনায় কিছুটা কমপ্লেক্স হয়ে থাকে তাই গ্রুপ বা টিমের সাথে থাকতে কিছুটা অস্বস্তি বোধ করেন ।
৫. হাস্যরস বোধ
১৯৭০দশক থেকে এখন পর্যন্তে এক গবেষণা অনুসারে, কমেডিয়ানরা (কৌতুক অভিনেতা) ধারাবাহিকভাবে গড় জনসংখ্যার তুলনায় বেশি আইকিউ স্কোর করেন ।যেখানে সাধারণ পুরুষ ও মহিলাদের গড় আইকিউ স্কোর ছিল ৯০ থেকে ১১০এর মধ্যে সেখানে পুরুষ কমেডিয়ানদের গড় ১৩৮ এবং মহিলা কমেডিয়ানদের গড় ১২৬ ছিল । কারণ হাস্যরস সৃজনশীলতা, ভালো কথা বলার দক্ষতা ও যৌন আকর্ষণীয় হওয়ার সাথে সম্পর্কযুক্ত ।
৬. কৌতুহল
একজন জিনিয়াস ব্যক্তির মনে সবকিছু সম্পর্কে প্রশ্ন জাগে এর উত্তর খুজেঁ বেড়ায় । আপনার মধ্যে যদি বিভিন্ন বিষয়ে কৌতুহল থাকে তাহলে আপনিও একজন প্রতিভাবান লোক ।
৭. ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন
বু্দ্ধিমান বা জিনিয়াস লোকেরা জীবনে করা বিভিন্ন ভুল সিদ্ধান্তগুলো থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে এরকম খারাপ পরিস্থিতে যাতে আর পড়তে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখেন । তাই তারা জীবনে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেন ।
Image by khamkhor from Pixabay |
৮. পড়তে পছন্দ করেন
আপনি কি পড়তে পছন্দ করেন? বই পড়া আপনার কখনও শেষ না হওয়া চিন্তা এবং জ্ঞান এর খোরাক । অভিনন্দন, বন্ধু আপনি একজন বুদ্ধিমান লোক ।
৯. বাম হাতের ব্যক্তি
দীর্ঘ অধ্যয়ন ও গবেষণায় দেখা গেছে শারীরিকভাবে বাম হাতের লোকরা ডান হাতের লোকদের তুলনায় বুদ্ধিমান হওয়ার প্রবণতা বেশি ।পরীক্ষায় বাম হাতের লোকদের মস্তিষ্ক ভালো শব্দভান্ডার গঠন ও সমস্যা সমাধানে বেশি সক্রিয় ছিল ।
১০. রাত জাগা পাখি
ঘুমাতে যাওয়ার সময় যদি আপনার মস্তিষ্কের মধ্যে ধ্রুবক চিন্তাভাবনা ঘুরপাক খায়, আগামী দিনের পরিকল্পনা করেন, পাজাল সমাধান করেন কিংবা বই পড়েন যার কারণে ঘুমাতে দেরি হয় তাহলে আপনি জিনিয়াস ব্যক্তিদের তালিকায় রয়েছেন ।
১১. অবগত থাকা
অবহিত থাকা জিনিয়াস ব্যক্তিদের কমন একটি অভ্যাস । নতুন কিছু শেখার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে হালনাগাদ তথ্য রাখেন ।
১২. দেরিতে ঘুম থেকে উঠা
সকালে ঘুম ঙেঙ্গে যাওয়ার পরও যদি আপনি পুনরায় তন্দ্রাচ্ছান্ন হয়ে যান বিছানা থেকে ওঠতে দেরি হয় তাহলে এজন্য আপনার অপরাধবোধে ভোগার কারণ নেই, বরং এ ধরনের আচরণ দ্বারা এটাই বুঝা যায় যে আপনি অনেক বেশি বুদ্ধিমান, সৃজনশীল এবং সুখি । কেন রাত জাগা মানুষেরা অনেক বেশি বুদ্ধিমান এই বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করে নেদারল্যান্ড এর এলসভিয়ার কোম্পানি । যাতে ব্যাখ্যা করা হয় যে, আপনার ঘুমাতে যাওয়া এবং জেগে ওঠা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে না থাকলে তা আপনার বুদ্ধিমত্তার লক্ষণ ।
বিভিন্ন গবেষণার তথ্যমতে উপরে উল্লেখিত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলো একজন বুদ্ধিমান বা জিনিয়াস ব্যক্তির মধ্যে পাওয়া যায় । তবে এর অর্থ এই নয় যে, বুদ্ধিমান ব্যাক্তি মানেই সফল ব্যক্তি । এখানে শুধুমাত্র বোঝায় যে, উক্ত বৈশিষ্ট্যধারী ব্যক্তিরা সাধারণ মানুষের থেকে বুদ্ধিমত্তার মাপ কাঠিতে এগিয়ে থাকেন বা আইকিউ লেভেলে বেশি হয়ে থাকে ।
0 মন্তব্যসমূহ